সরকার পরিবর্তনের পর সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার চালিতাডাঙ্গা বি,বি,এন বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক ও কর্মচারীদের আত্মগোপন এবং শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার পরিস্থিতি ক্রমেই সংকটময় হয়ে উঠছে। প্রতিবেদনে উল্লেখিত শিক্ষক এবং কর্মচারীদের অনুপস্থিতির ফলে বিদ্যালয়ে পাঠদান ও প্রশাসনিক কার্যক্রমে এক বিরাট সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে, যা শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক শিক্ষার পরিবেশকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
এলাকার স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট সরকারের পরিবর্তনের পর থেকে বিদ্যালয়ের ২১ জন স্টাফের মধ্যে ৬ জনই আত্মগোপনে চলে গেছেন। বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মোঃ কামাল পাশা, সহকারী শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান, অফিস সহকারী মুঞ্জুরুল ইসলাম ও জাহাঙ্গীর আলম, গেটম্যান বুলু খান এবং নৈশপ্রহরী সুলতান মাহমুদ বিদ্যালয়ে আর উপস্থিত থাকছেন না। তাদের অনুপস্থিতির ফলে বিদ্যালয়ের নিয়মিত প্রশাসনিক কার্যক্রম কার্যত স্থবির হয়ে পড়েছে।
বিদ্যালয়ে একাধিক শিক্ষক ও কর্মচারীর অনুপস্থিতির কারণে শিক্ষার পরিবেশ ভেঙে পড়েছে। প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলামের দায়িত্বে থাকা সত্ত্বেও শিক্ষকদের ফিরিয়ে আনার কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তিনি দাবি করেছেন, অনুপস্থিত শিক্ষক ও কর্মচারীদের সঙ্গে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছে এবং তাদের বিদ্যালয়ে ফিরে আসার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। তবে এই আহ্বান কেবল মৌখিক ছিল, কারণ আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো নোটিশ বা নির্দেশ জারি করা হয়নি।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে অফিসিয়াল কোনো নোটিশ জারি হয়নি। এমনকি বিষয়টি মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে জানানো হয়নি, যা একটি গুরুতর অবহেলা হিসেবে স্থানীয়রা মনে করছেন। প্রধান শিক্ষক প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছেন বললেও এ পর্যন্ত প্রয়োজনীয় কোনো উদ্যোগ নেয়নি, যা শিক্ষার পরিবেশের প্রতি তার উদাসীনতারই প্রতিফলন।
স্থানীয় অভিভাবকরা বলছেন, প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম বিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম বজায় রাখতে ব্যর্থ হয়েছেন। তাদের অভিযোগ, কঠোর সিদ্ধান্ত ও নিয়মের অভাবে বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ বিঘ্নিত হয়েছে, যা শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় প্রভাব ফেলছে। স্থানীয়রা প্রশ্ন তুলেছেন, বিদ্যালয়ের শিক্ষা ব্যবস্থা রক্ষায় প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম আদৌ কতটা দায়বদ্ধ?
এদিকে শিক্ষার্থীরা জানান, গত ৫ আগষ্ট পর থেকে দুজন শিক্ষক না থাকায় নিয়মিত পাঠদান সমস্যা হচ্ছে যার ফলে তাদের শিক্ষা কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, যা তাদের ভবিষ্যৎ শিক্ষাজীবনে প্রভাব ফেলতে পারে। শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরাও এই সংকট নিরসনে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য স্থানীয় প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।