তুমি মুনতাহার জীবন নষ্ট করছো কেন? এই কথা বলেই ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রকে ৩০ মিনিট ধরে বেত্রাঘাত করে আহত করার অভিযোগ উঠেছে দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর পরিবার সুষ্ঠ বিচার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন।
ভুক্তভোগী আদিব মাহমুদ সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার চালিতাডাঙ্গা ইউনিয়নের মাথাইল চাপড় এলাকার তোজাম্মেল হকের ছেলে ও মুনলাইট স্কুল এন্ড কলেজের ষষ্ঠ শ্রেনীর ছাত্র।
অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, গত ২৬ নভেম্বর সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার মুনলাইট স্কুল এন্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক মোখলেছুর রহমান ও সহকারী শিক্ষক নুর মোহাম্মদ মিথ্যা দোষারোপ করে ষষ্ঠ শ্রেনীতে অধ্যায়নরত আদিবকে অফিস কক্ষে নিয়ে ৩০ মিনিট বেত্রাঘাত করার পর তার ক্ষতস্থান গুলো ভিডিও করে রাখেন।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী আদিব জানান, সিদরাতুল মুনতাহা নামে তার এক সহপাঠীর জীবন নষ্ট করার মিথ্যা দোষারোপ দিয়ে দুই শিক্ষক মিলে তাকে মারধর করে। অথচ মুনতাহা নিজেই ক্লাস ফোর থেকে আদিবকে বিরক্ত করে আসছে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর মা ও বাবা জানান, সিদরাতুল মুনতাহা নামের ওই মেয়েটা আদিবকে ২ বছর আগে থেকে বিরক্ত করতো। বিভিন্ন সময়ে আমাদের মোবাইল নাম্বারে কল করতো এবং আদিবকে প্রায়-প্রায় চিঠিও দিতো। এসব কথা আদিব আমাদের কাছে বলতো। গত ২৫ নভেম্বর সোমবার স্কুল ছুটির পর আদিব সবার সাথে বাড়িতে ফিরছিলো। আদিবের পায়ে ব্যাথা থাকার কারণে তার হাটতে অসুবিধা হচ্ছিলো এবং রাস্তার অপর প্রান্ত দিয়ে মুনতাহাও যাচ্ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে প্রধান শিক্ষক মোখলেছুর কাজিপুর উপজেলার আলমপুর বাজারের একটি কফিশপ থেকে বের হয়ে আদিব’কে গাল-মন্দ করে। পরদিন ২৬ নভেম্বর আদিব স্কুলে যাওয়ার পর অফিসকক্ষে ডেকে নিয়ে প্রধান শিক্ষক মোখলেছুর ও সহকারী শিক্ষক নুর মোহাম্মদ মিলে আদিবকে ৩০ মিনিট যাবত বেত্রাঘাত করে মারাত্মকভাবে জখম করে এবং সেগুলো তারা ভিডিও করে রাখে। মারধরের পরে আদিব ভীষণভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আমরা এ ঘটনার বিচার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
এ বিষয়ে মুনলাইট স্কুল এন্ড কলেযের প্রধান শিক্ষক মোখলেছুর বলেন, ৩০ মিনিট বেত্রাঘাত করার অভিযোগটি মিথ্যা। আদিবকে একটু শাসন করেছি এবং তার প্রমাণ রাখার জন্য ভিডিও করেছি।
আদিবকে কেন মারা হলো এমন প্রশ্নের উত্তরে সহকারী শিক্ষক নুর মোহাম্মদ জানান, কেন মারা হয়েছে বিষয়টি আমি জানিনা। আমি প্রত্যক্ষদর্শী ছিলাম। আদিবকে এমন বেত্রাঘাত করাটা মেনে নেওয়ার মতো না বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে কাজিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) দেওয়ান আকরামুল হক জানান, দুই শিক্ষক মিলে ছাত্রকে মারধর করে আহত করেছে এমন অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।