বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক তুহিন ওয়াদুদকে আওয়ামী লীগের দালাল,ভূমি দস্যু উপাধি দিয়ে কুড়িগ্রামের রাজারহাটে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন রাজারহাট উপজেলা বিএনপি যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক আবুল কালাম আজাদ। মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) রাজারহাট উপজেলার সোনালী ব্যাংকের সামনে চাকিরপশা বিল প্রান্তিক কৃষক ও পরিবেশ সুরক্ষা কমিটির মানববন্ধনে এমন ঘোষণা দেন বিএনপির ওই নেতা।
এসময় চাকিরপশা বিলের ভূমি মালিকসহ উপজেলার মৎস্য চাষীরা উপস্থিত ছিলেন। রাজারহাট উপজেলা বিএনপি যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক আবুল কালাম আজাদ বলেন,তুহিন ওয়াদুদ আওয়ামীলীগ সরকারের চিহ্নিত দালাল।তাকে আমরা আইনের আওতায় আনতে চাই।
বিলকে যেন নদীতে রূপান্তরিত করতে না পারে তার ষড়যন্ত্র রুখে দিতে চাই।এছাড়া তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। তিনি আরো বলেন,সে কুড়িগ্রামে প্রবেশ করলে রাজারহাট বিএনপি তুহিন ওয়াদুদকে প্রতিহত করবে।তুহিন ওয়াদুদকে কুড়িগ্রামে আমরা অবাঞ্ছিত ঘোষনা করলাম। তুহিন ওয়াদুদের নির্যাতনে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক একেএম ফরিজল মিয়া বলেন,তুহিন ওয়াদুদের পিতা ডা.আব্দুল কুদ্দুসের কাছে আমি জমি কিনেছি কিন্তু তুহিন ওয়াদুদ এখন সেই জমি গুলো নদী দাবি করছেন।আমার ১০০মন ধানের জমি নষ্ট করেছেন তুহিন ওয়াদুদ।
আমার যে ক্ষতি হয়েছে তার সুষ্ট বিচার দাবি করছি। মানববন্ধনে কৃষক ফারুক মন্ডল বলেন,চাকিরপশা বিলে ধান চাষ করে অনেক কৃষক জীবিকা নির্বাহ করেন। কিন্তু একটি কুচক্রী মহল এই বিলকে নদী দেখিয়ে কৃষকের পেটে লাথি দেবার পায়তারা করছেন।আমরা কার কাছে বিচার দিবো।দীর্ঘদিন ধরে এদের অত্যাচার সহ্য করে আসছি।কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে কিন্তু এখন আমার আত্মহত্যা করা ছাড়া উপায় নেই। তিনি জমির দলিল দেখিয়ে বলেন,তুহিন ওয়াদুদের বাপ-চাচা যে জমি বিক্রি করে খেয়েছেন এখন তারা সেই জমিগুলোকে নদী বলে দাবি করছেন।তখন তাহলে কি এটা নদী ছিলনা? তিনি আরো বলেন,এটা ব্যাক্তি মালিকানার থাকা জমিকে কিভাবে নদী বলতে পারেন।
আজ আমরা কৃষককে বাঁচানোর জন্য এবং চকিরপশা বিলে যারা মাছ চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করেন তাদের জন্য দাড়িয়েছি।আমরা এই হয়রানির থেকে মুক্তি চাই। কৃষক আজগার আলী বলেন,এই তুহিন ওয়াদুদ আমার কেনা জমিকে নদী বানাতে চান। তার বাপ-দাদা যখন জমি বিক্রি করে তখন কি এটা নদী ছিলো না? আমরা অসহায় কৃষক এর সুষ্ঠ বিচার দাবি করছি। মানববন্ধনে রাজারহাট সদর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আশেকুল আলম টুটুল বলেন,তুহিন ওয়াদুদ হলো আওয়ামী লীগ এর দালাল। তার বাপ-দাদা এখানে জমি বিক্রি করেছেন এখন সে তহবিল হারা হয়ে পথে পথে ঘুরছে।বিভিন্ন মানুষকে ঘুষ দিয়ে বিলকে নদী বানানোর চক্রান্ত করছেন। তিনি আরো বলেন,মানুষের ক্রয়কৃত জমি তুহিন ওয়াদুদ হাতিয়ে নিতে চায়। সে একজন ভূমিদস্যু।
কৃষকদের জমি,সাধারণ মানুষের জমি হাতিয়ে নেবার সাহস সে কোথায় পায়? তিনি অভিযোগ করে বলেন,চাকিরপশা বিলে ব্রিজ নির্মানের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে চাপ দেন তুহিন ওয়াদুদ কিন্তু কর্মকর্তারা এখানে এসে পানির লেভেল পরিক্ষা করে জানান ব্রিজ নির্মানের জন্য যে পানি প্রবাহ প্রয়োজন তা এই বিলে নেই। সেকারণে সরকারি অর্থ তারা অপচয় করবেন না। রাজারহাট উপজেলা বিএনপির সদস্য বাবুল মিয়া বলেন,তুহিন ওয়াদুদ রাজারহাটে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় বিভিন্নভাবে সাধারণ মানুষের ওপর নির্যাতন করেছেন।তিনি একজন সুবিধাবাদী বহুরূপী মানুষ।
কৃষকদের উপর এমন নির্যাতন আমরা সহ্য করবো না।রাজারহাট উপজেলা বিএনপি তুহিন ওয়াদুদকে কখনোই ছাড় দেবে না। উল্লেখ্য,বেলা ১১টায় শুরু হওয়া চকিরপশা বিল প্রান্তিক কৃষক ও রাজারহাট পরিবেশ সুরক্ষা কমিটির মানববন্ধন শেষ হয় দুপুর ১টায়।এসময় কয়েক হাজার সাধারণ মানুষ উপস্থিত ছিলেন।