1. info.shironamnews@gmail.com : NEWS TV : NEWS TV
  2. info@www.shironamnews.live : Shironam News :
রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ১২:১২ পূর্বাহ্ন

২ কিলোমিটার সাঁতরে ৬ দিন পর পানিবন্দি বোনকে উদ্ধার করল ভাই

অনলাইন ডেস্ক
  • প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২৯ আগস্ট, ২০২৪
  • ১৬৬ বার পড়া হয়েছে

নানা প্রতিবন্ধকতা জয় করে ২ কিলোমিটার সাঁতার কেটে ফুলগাজী উপজেলাতে ছয় দিন ধরে পানিবন্দি থাকা বোনকে উদ্ধার করে সোনাগাজীতে নিয়ে আসেন মানিক ভাদুড়ি।

বোনকে উদ্ধারে মানিকের পথটি মোটেই মসৃণ ছিল না। দীর্ঘ ৪০ কিলোমিটার পানিতে তলিয়ে থাকা সড়ক পাড়ি দিয়ে সোনাগাজী থেকে ফুলগাজীতে যেতে সময় লেগেছে ৮ ঘণ্টা। কখনো পায়ে হেটে, কখনো ট্রাক্টরে, কখনো নৌকাতে পথ অতিক্রম করতে হয়েছে তাদের।

জানা গেছে, সোনাগাজী উপজেলার চরছান্দিয়া ইউনিয়নের ওলামাবাজার সংলগ্ন স্বর্ণকার রতন ভাদুড়ির মেয়ে স্কুলশিক্ষিকা কনা ভাদুড়ি। গত ৩ বছর আগে পারিবারিক সম্মতিতে ফুলগাজী উপজেলার শ্রীছন্দ্রপুর গ্রামের স্কুল শিক্ষক দিপংকর বৈদ্যের সঙ্গে বিয়ে হয়। গত ২০ আগস্ট ভারী বৃষ্টিপাত ও উজানের ঢলে ফুলগাজী প্লাবিত হলে স্বামীর বাড়িতে পানিবন্দি হয়ে পড়েন কনা ভাদুড়ি। হঠাৎ বিদ্যুৎ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধ হয়ে যাওয়াতে উদ্ধারের জন্য বাবা ও ভাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি।

মানিক ভাদুড়ি বলেন, গত ১৯ আগস্ট রাতে ফোন করে এলাকা বন্যায় প্লাবিত হওয়ার বিষয়টি অবহিত করেন বোন কনা। পরে যোগাযোগ করতে পারিনি। একই সময়ে সোনাগাজীতেও পানিতে প্লাবিত হওয়া শুরু হয়। বোনের কোনো খোঁজ না পেয়ে পরিবারের সবাই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। বেঁচে আছে নাকি মারা গেছে সে দুশ্চিন্তায় পরিবারের অস্থির হয়ে উঠে। এমন পরিস্থিতিতে বোনের বাড়িতে যেতে কয়েকবার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হই। কারণ, সোনাগাজী থেকে ফুলগাজীতে যাওয়ার পুরো পথ সাত আট ফুট পানিতে তলিয়ে যায়। দুই বার জলমগ্ন পথ পাড়ি দিয়ে পায়ে হেটে ফেনী শহরের হাসপাতাল মোড় পর্যন্ত যেতে পারলেও সামনে আর যাওয়া সম্ভব হয়নি। সেনাবাহিনী ও স্বেচ্ছাসেবক দলের কাছে সহযোগিতা চেয়েও সাড়া পায়নি।

পরে গতকাল মঙ্গলবার আত্মীয়-স্বজনকে সঙ্গে নিয়ে ফুলগাজীর উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করি। ৪০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে কখনো পায়ে হেঁটেছি, কখনো ট্রাক্টরে চড়েছি, প্রায় ৮ ঘণ্টা পর ফুলগাজী উপজেলার জিএমহাটে পৌঁছতে সক্ষম হই। জিএমহাট থেকে শ্রীচন্দ্রপুর গ্রামে যাওয়ার পুরো পথ পাঁচ ফুট পানিতে তলিয়ে থাকায় দুই কিলোমিটার পথ সাঁতার কেটে বোনের বাড়িতে পৌঁছাতে সক্ষম হই। জলমগ্ন বসতঘরে বোনকে না পেয়ে স্থানীয়দের দেওয়া তথ্যে পার্শ্ববর্তী গ্রামের তিনতলা ভবনে বোনের সন্ধ্যায় পায়। পরে দীর্ঘ পথের প্রতিবন্ধকতা মাড়িয়ে বোন ও ভাগিনাকে বাড়িতে নিয়ে আসি।

কনা ভাদুড়ি জানায়, ১৯ আগস্ট রাতে এলাকায় পানি উঠা শুরু করে, একইসঙ্গে ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হয়। প্রথমে তেমন গুরুত্ব না দিলেও রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পুরো এলাকা পানিতে প্লাবিত হওয়া শুরু করলে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে পার্শ্ববর্তী বাড়িতে আশ্রয় গ্রহণ করি। রাতের মধ্যে পুরো এলাকা প্লাবিত হয়ে বাড়িঘর তলিয়ে যায়। গত ছয় দিনে কেউ উদ্ধার করতে যায়নি, এমনকি ত্রাণ সহায়তাও পায়নি। ওই ভবনের দ্বিতীয় তলায় আমরা ১৫ পরিবার ছিলাম। চাল ডাল ছিল সেগুলো রান্না করে ভাগ করে খেয়েছি তবে খাওয়ার পানির অভাবে সবাই অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। যেভাবে পানি বেড়েছে তা দেখে বাঁচার আশা ছেড়ে দিয়েছি। আমাদের বাড়ি থেকে ভাইসহ আত্মীয়-স্বজন না গেলে আরও কয়েকদিন পানিবন্দি থাকতে হতো।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০  
© www.shironamnews.live
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট